ছোঁয়া II ভাষান্তর: সৈয়দ ইকবাল

জেলখানার চিরকুট থেকে)

 

আমি যখনই বের হই

বলবো কাউকে তখন

ছুঁতে আমাকে

খুবই আলতো করে

আর ধীরে,

আমি চাই

আবারো শিখতে

জীবন কীভাবে হয় অনুভূত।

 

কেউ ছোঁয়নি আমায়

সাতটি বছর ধরে

সাত বছর হলো

আমি অচ্ছুৎ

ছোঁয়ার অতীত

আমি শিখেছি

জানতে এখন

অচ্ছুতের মর্মার্থ।

 

অচ্ছুৎ - তবে পুরোপুরি নয়

আমি গুণতে পারি সেসব জিনিস

যা যা ছুঁয়েছে আমায়

 

একঃ মুষ্ঠিবদ্ধ হাত

শুরুতেই

হিংস্র উন্মাদ মুষ্ঠিবদ্ধ হাত

আঘাত হানছে তো হানছে

যতটুকু মনে পড়ে

আমি চিৎকার করছি

আমাকে ছুঁয়ো না

দয়াকরে ছুঁয়ো না আমায়।

 

দুইঃ থাবা

থাবার প্রথম চার বছর

প্রতিদিন

থাবড়ায়ে চলছে থাবা, খুঁজে চলেছে

হাত উপরে উঠায়ে, জুতা খুলে

পা দুটো ফারাক করে

খোঁচাচ্ছে সুতীক্ষ্ণ থাবা, নিয়মতান্ত্রিক

তীব্র, নিরাবেগ

খুঁচিয়ে চলেছে

তাবৎ গোপনীয়তায়।

 

আমি চাই না মুষ্ঠিবদ্ধ হাত কিংবা থাবা

চাই আমি

কারো ছোঁয়া

আবার

এবং আমায় ছুঁতে,

আমি জীবিত বোধ করতে চাই

আবারোও

আমি বলতে চাই

যখনই বের হবো

এই যে আমি এখানে

কেউ ছোঁও আমায়, দয়াকরে।

 

মূলঃ হিউগ লুইন (১৯৩৯ – ২০১৯)

[দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলনকারী ও লেখক]

ভাষান্তরঃ সৈয়দ ইকবাল


Comments