মরুদ্যান II চারুলতা


প্রকৃতির বশীকরণ মন্ত্রে দীক্ষিত লোহিত অগ্নিপিণ্ডের
তেজস্ক্রিয়তা সয়ে চকচকে বালুময় দেহে
মরুদ্যান পড়ে রয় বিতৃষ্ণ আত্মা নিয়ে;
ক্ষুদ্র প্রাণের পাকস্থলী পুড়ে খাঁক হচ্ছে জলের অভাবে

এই জলশূণ্য বক্ষে তারা পারে না প্রস্ফুটিত হতে। 
মরুর বুকেই জন্মানো ক্যাকটাস কাণ্ডে পানি জমিয়ে
বেঁচে আছে গুমোট আত্ম অহংকারে;
ঔদ্ধত্যের কাঁটায় প্রতিনিয়ত ছিদ্র হচ্ছে মানবতার লোমকূপ। 

রক্তের ফোটায় উত্তপ্ত বালু শীতল করে
চড়াই-উৎরাইয়ের পথে হেঁটে চলে পদযুগল 
ঝুলি ভর্তি হচ্ছে হীরে ভেবে কুড়ানো কাচের টুকরোতে।
প্রাসাদে রাখা ফুলদানীতে সাজানো রঙিন ফুলের তোড়া
মরে গেছে ফুলগুলোর প্রাণের সুবাস;
দেহ জুড়ে শুকনো পাতার গন্ধ; ফুলগুলো যে কাগজের!
সুরভিত পাপড়ি যুগলে নয়,
সবাই এখন রাঙা কাগজের ফুলেই আসক্ত। 
কৃত্রিম আলোর উৎসবে মুছে যায় সকল কালো
কিন্তু ঘনকালো ছায়া যে পড়ে আছে পাশেই
অন্ধকার বিদ্রুপের সুরে বলে জিতে গেছি আমি,
যে প্রাসাদে সর্বত্র আঁধারের জয়
সেখানে চোখ ধাধানো ঝাড়বাতির আলো নিতান্তই বিলাসিতা! 

রিসাইকেলিং যুগের হাতল ধরে ঘুরতে থাকা
ধুলো জমা চোখ কৃত্রিমত্তার বিষাক্ততায় মত্ত
আত্মতৃপ্তি এখানে বড়ই দুর্লভ;
মরুজাহাজের কুঁজে পানি জমিয়ে রাখার মতই
জীবনও পাজরে সামান্য রক্তরস জমিয়ে রাখে
বেঁচে থাকার চরম তাগিদে।

Comments